অনলাইনে পরীক্ষা ও ভর্তি নিয়ে ইউজিসির আহ্বান স্থগিতের অনুরোধ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে ইউজিসি যে আহ্বান জানিয়েছিল, তা স্থগিত রাখার অনুরোধ

৮৩

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে ইউজিসি যে আহ্বান জানিয়েছিল, তা স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি’। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

তবে ইউজিসি বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের আগের অবস্থানই বহাল থাকবে। কারণ এই পরিস্থিতিতে ভর্তি ও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।

৬ এপ্রিল ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরও কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম চালু রাখায় এই নির্দেশনা দিয়েছিল ইউজিসি। অবশ্য বন্ধের সময় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি সাময়িকভাবে পূরণের জন্য অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করে আসছে ইউজিসি।

ইউজিসির এই আহ্বান নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর গত বুধবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন ইউজিসির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহকে চিঠি দিয়ে ওই আহ্বান স্থগিত রেখে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানান।

চিঠিতে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, অনলাইন প্রক্রিয়ার ভর্তি ও পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের বহু খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আগে থেকেই পূর্ণাঙ্গ অনলাইন ব্যবস্থা সফলতার সঙ্গে ব্যবহার করে আসছে। বাংলাদেশেও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ার অধিকাংশ কার্যক্রম অনলাইনে করে থাকে। এ ছাড়া এই দুর্যোগের সময় পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সর্বশেষ অনলাইন পরীক্ষার উন্নত প্রযুক্তি স্থাপন করেছে, যা সফলভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ধারার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেমিস্টার সূচি অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে একদিকে যেমন সেশনজট ও শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশেষ করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

তবে আজ শুক্রবার ইউজিসির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চিঠির জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের অবস্থান হলো করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই অবস্থায় অনলাইনে পরীক্ষা বা শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়ার পরিবেশ নেই। এ জন্য ইউজিসির আগের আহ্বান সংশোধনের পরিবেশও আসেনি। এখন সবার আগে টিকে থাকা প্রয়োজন। তাই আগের আহ্বানটি বহাল থাকবে। পরিবেশ ভালো হলে আলোচনা করে বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

ইউজিসি আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও বলেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম বন্ধ রাখতে ইউজিসির আহ্বান পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর